
পিবিআইয়ের ব্রিফিং
ধামরাইয়ে চালক সায়েদুর রহমান হত্যাকান্ড ও অটোরিকশা ছিনতাইয়ের রহস্য উদঘাটন করেছে পিবিআই। ঘটনার সাথে জড়িত থাকার অভিযোগে গ্রেপ্তার করা হয়েছে দুই ব্যক্তিকে। এরা হলেন হলেন সদর আলী ও আলমগীর।
হত্যাকান্ডের দুই বছর মঙ্গলবার দুপুরে ঢাকা জেলা পিবিআই কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে তদন্ত সংস্থা পিবিআই।
এতে বলা হয় পরকীয়ার জেরেই ঘটেছে ছিনতাই আর খুনের ঘটনা।
ইতিমধ্যে আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দির মাধ্যমে হত্যাকান্ডের দায় স্বীকার করেছে আসামীরা।
গত ২০২৩ সালে ২৮ নভেম্বর সকালে ধামরাইয়ের বাইশাকান্দার কেষ্টখালী গ্রামের জনৈক ফজলে মাহবুব এর ধানক্ষেতের পাশ থেকে উদ্ধার করা হয় অজ্ঞাতনামা এক পুরুষের লাশ। এই ঘটনায় ধামরাই থানার এসআই আব্দুল জব্বার বাদী হয়ে ধামরাই থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। পরে মামলাটির তদ্ন্তভার দেয়া হয় এসআই পাভেল মোল্লাকে। তদন্তে সনাক্ত হয় অজ্ঞাত লাশের পরিচয়। তার নাম সায়েদুর রহমান।পেশায় অটোরিকশা চালক।পরবর্তীতে পুলিশ হেডকোয়ার্টার্সের নির্দেশে মামলাটির তদন্তভার পিবিআইতে ন্যস্ত হয় এবং এসআই আনিসুর রহমান মামলাটি তদন্ত করেন।
পিবিআই ঢাকা জেলার পুলিশ সুপার কুদরত-ই-খুদা জানান,তথ্য-প্রযুক্তি ও গোয়েন্দা তথ্যের হত্যা ও অটো ছিনতাইয়ের ঘটনায় জড়িত সন্দেহে সদর আলী ওরফে সোহরাব (৪৭) কে গ্রেফতার করে আদালতে মাধ্যমে রিমান্ডে এনে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। আসামি সদর আলী ওরফে সোহরাবের দেয়া তথ্যের ভিত্তিতে গত ১৮ সেপ্টেম্বর ঘটনার মূল আসামি আলমগীর (২৫) কে গ্রেফতার করা হয়। পরদিন আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি প্রদান করেন তারা।
পিবিআই বলছে, আসামীদের জবানবন্দি পর্যালোচনায় জানা যায় যে, আসামি সদর আলী ওরফে সোহরাব (৪৭) ও আলমগীর (২৫) এবং আসামি জুয়েল একই বাসায় পাশাপাশি রুমে বসবাস করতো। আলমগীর এবং জুয়েল অবিবাহিত ছিল। পরবর্তীতে সদর আলী ওরফে সোহরাব (৪৭) এর স্ত্রী ও আসামি জুয়েলের মধ্যে অনৈতিক সম্পর্ক তৈরি হয় এবং জুয়েল, আলমগীরের সহায়তায় সদর আলীর স্ত্রীকে ভাগিয়ে নিয়ে যায়। তারপর আসামী সদর আলী ভিকটিম সায়েদুর রহমানের স্ত্রীর সাথে পরকীয়ার সম্পর্কের চেষ্টা করে এবং আলমগীরও ভিকটিম সায়েদুর রহমানের স্ত্রীর সাথে পরকীয়ার সম্পর্কে জড়াতে চায়। সদর আলীর স্ত্রী জুয়েলের সাথে ৬ মাস থাকার পর আবার সদর আলীর কাছে ফিরে আসে।
নগদ টাকার প্রয়োজন হলে সদর আলী সদর আলী,আলমগীর ও জুয়েল অটোরিক্সা চালক সায়েদুর রহমানের অটোরিক্সা ছিনতাই করে বিক্রির পরিকল্পনা করে। পরিকল্পনা অনুযায়ী তারা সায়েদুর রহমানকে ফুসলিয়ে গান শোনার অজুহাতে বাইরে নিয়ে গিয়ে ফেরার পথে ধামরাই থানাধীন কেষ্টখালি গ্রামের নির্জন স্থানে গামছা দিয়ে মুখ বেঁধে, হাত ও পায়ে রশি বেঁধে উপর্যুপরি ছুরিকাঘাত করে হত্যা নিশ্চিত করে মৃতদেহ ফেলে রেখে পালিয়ে যায়। হত্যাকান্ডের পর তারা সায়েদুর রহমানের অটোরিক্সা ৫০ হাজার টাকায় বিক্রি করে এবং উক্ত টাকা নিজেদের মধ্যে ভাগাভাগি করে।
এ বিষয়ে পিবিআই ঢাকা জেলার পুলিশ সুপার জনাব মোঃ কুদরত-ই-খুদা, পিপিএম-সেবা বলেন, “দায়িত্ব পাওয়ার পর আমরা ঘটনার বিষয়ে প্রকাশ্য ও গোপনে তদন্ত শুরু করি। এক পর্যায়ে তথ্য-প্রযুক্তি ও গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে আসামী সদর আলী ও আলমগীদ্বয়কে গ্রেফতার করে আদালতে সোপর্দ করি। আসামীদ্বয় বিজ্ঞ আদালতে স্বীকারোক্তিমলক জবানবন্দি প্রদান করেছে। নগদ টাকার প্রয়োজনে পরিকল্পিতভাবে আসামীদ্বয় ভিকটিমকে হত্যা করে তার অটোরিক্সা ছিনতাই করে বিক্রি করেছে।
প্রিন্ট