
থেকে সরকার ভ্যাট পাচ্ছে নামমাত্র ৫২৬ কোটি টাকা। সে হিসাবে সরকার বছরে প্রায় ১৮ হাজার কোটি টাকার রাজস্ব হারাচ্ছে এই খাত থেকে।
নিবন্ধন বৃদ্ধির আগ্রহ নেই: ২০২১ সালে হোটেল-রেস্তোরাঁ খাত নিয়ে একটি জরিপ চালিয়েছিল ভ্যাট গোয়েন্দা। সে সময়ের জরিপে দেখা গেছে, প্রতি পাঁচটি ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানের মধ্যে চারটিরই নিবন্ধন নেই। তবে এরপর এই খাতে বিনিয়োগ আরো বেড়েছে। অনিবন্ধিত প্রতিষ্ঠানের সংখ্যাও বেড়েছে। বর্তমানে দেশের ৯৭ শতাংশ হোটেল-রেস্তোরাঁ নিবন্ধনের আওতার বাইরে। তবে এগুলোর নিবন্ধনের আওতায় আনতে চান না খোদ এনবিআর কর্মকর্তারাই। প্রতি মাসে ভ্যাট রিটার্ন দেওয়ার সময় হলেই নির্দিষ্ট জোনের ভ্যাট কর্মকর্তা হাজির হন সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানে। তখন ভ্যাটের পরিবর্তে তিনি আদায় করেন ঘুষ। এতে বঞ্চিত হয় সরকার। এমন তথ্যই তুলে ধরেছেন বাংলাদেশ রেস্তোরাঁ মালিক সমিতির মহাসচিব ইমরান হাসান।
তিনি সংবাদমাধ্যমকে বলেন, ‘এখন দেশে চার লাখ ৮২ হাজার হোটেল ও রেস্টুরেন্ট আছে। এর মধ্যে অল্পসংখ্যক সরকারের ভ্যাট পরিশোধ করে। বাকিরা এই ভ্যাটের টাকা পকেটে ঢুকায়। এসব হলো ভ্যাট কর্মকর্তাদের চুরি করার একটা রাস্তা। সবাইকে তাঁরা ভ্যাটের আওতায় আনতে চান না। ফলে একটা অসুস্থ প্রতিযোগিতা চলছে। এই প্রতিযোগিতায় আমাদের টিকে থাকা কঠিন। যারা ভ্যাট দেয় তাদের ওপরই জুলুম হয়, যারা দেয় না তাদের কোনো সমস্যা নেই। সেখান থেকেই চাঁদা নিয়ে তাঁরা (কর্মকর্তারা) চলেন।’
‘নিবন্ধনের আওতায় আনা প্রয়োজন’: সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) জ্যেষ্ঠ গবেষণা সহযোগী তামীম আহমেদ সংবাদমাধ্যমকে বলেন, ‘রাজনৈতিক সরকারের ক্ষেত্রে ভোট ও জনপ্রিয়তার একটা বিষয় থাকে। তাই অনেক জায়গায় ভ্যাটের কর্মকর্তারা গিয়েও ভ্যাট আদায় করতে পারতেন না। গেলেই সঙ্গে সঙ্গে ফোন আসত। এখন একটা সুযোগ ছিল অন্তত নিবন্ধনের আওতায় আনার। যেহেতু ভ্যাট ব্যবসায়ী পরিশোধ করেন না, করেন গ্রাহক। সরকারকে অজনপ্রিয় সিদ্ধান্ত নিয়ে তাদের নিবন্ধনের আওতায় আনতে হবে। সেই সঙ্গে ব্যাকওয়ার্ড লিংকেজ ইন্ডাস্ট্রিগুলোকেও নিবন্ধিত করতে হবে।’
কী বলছে এনবিআর: বিবিএসের তথ্য ও এনবিআরে নিবন্ধিত প্রতিষ্ঠানের সংখ্যায় বিরাট ফারাক এবং নতুন নিবন্ধন না করে শীর্ষ কর্মকর্তা পর্যন্ত সেই টাকার ভাগ যায়—এমন অভিযোগের বিষয়ে এনবিআরের সদস্য (ভ্যাট বাস্তবায়ন ও আইটি) মোহাম্মদ বেলাল হোসাইন চৌধুরী কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘এই ডেটা সঠিক নয়।’ তবে টাকার ভাগ প্রসঙ্গে তিনি কোনো মন্তব্য করেননি।
রেস্টুরেন্ট বৃদ্ধির কারণ: রাজধানী ঢাকাসহ সারা দেশেই একসঙ্গে সময় কাটানো ও আড্ডা দেওয়ার জায়গা অনেক সীমিত। তাই রেস্তোরাঁয় খেতে যাওয়াও কারো কারো কাছে বিনোদন। আয়ও বেড়েছে এই শ্রেণির মানুষের। নতুন নতুন খাবারের স্বাদও নিতে চান তাঁরা। সেই বৈচিত্র্যও নিয়ে এসেছে রেস্তোরাঁগুলো। চীনা, ভারতীয়, থাই, জাপানি, কোরীয়, আরবীয়, তুর্কি, পাকিস্তানি—নানা স্বাদের খাবার এখন ঢাকায়ই পাওয়া যায়।
প্রিন্ট