দুষ্কৃতকারীদের মুখোশ উন্মোচন করে সরকারকে সাহায্যের প্রতিশ্রুতিতে Dhaka Gazette Special Investigation (DGSI)

ঢাকার বায়ুদূষণ ভয়াবহ পর্যায়ে পৌঁছানোর কারণে সরকার সাভার উপজেলাকে ‘ডিগ্রেডেড এয়ারশেড’ হিসেবে ঘোষণা করেছে।
ফলে আগামী সেপ্টেম্বর ২০২৫ থেকে উপজেলার সব ইটভাটায় উৎপাদন কার্যক্রম বন্ধ হয়ে যাবে। তবে টানেল ও হাইব্রিড হফম্যান প্রযুক্তির ভাটা এই সিদ্ধান্তের বাইরে থাকবে।
পরিবেশ অধিদপ্তরের কর্মকর্তা বলেন,
“সাভারের বাতাসে ক্ষুদ্র কণা (PM 2.5) স্বাভাবিকের তুলনায় ২০ গুণ বেশি। এটি স্বাস্থ্য ও পরিবেশের জন্য মারাত্মক। দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়া জরুরি।”
প্রথম উপজেলা হিসেবে পদক্ষেপ
দেশে প্রথমবারের মতো কোনো উপজেলা ‘ডিগ্রেডেড এয়ারশেড’ ঘোষণা করা হলো। কর্মকর্তা আরও জানান,
“বছরে প্রায় ১৬০ দিনের বেশি সময় দূষণের মাত্রা অত্যধিক থাকে। তাই সাভারের পদক্ষেপ সময়োপযোগী।”
ইটভাটা ও বর্জ্য পোড়ানো বন্ধ
- ১০৭টি ইটভাটায় ইট পোড়ানো বন্ধ
- উন্মুক্ত স্থানে কঠিন বর্জ্য পোড়ানো নিষিদ্ধ
- নতুন শিল্প-কারখানা স্থাপনে অবস্থানগত ছাড়পত্র ও পরিবেশ ছাড়পত্র বন্ধ
এক ইটভাটা মালিক বলেন,
“আমরা পরিবেশের কথা বুঝি, তবে বিকল্প ব্যবস্থা ছাড়া উৎপাদন বন্ধ করা আমাদের জন্য বড় চ্যালেঞ্জ।”
পরিবেশ বিশেষজ্ঞ ড. রাশেদুল ইসলাম বলেন,
“সাভারের পদক্ষেপ সময়োপযোগী, তবে প্রযুক্তি ও পরিচ্ছন্ন জ্বালানি ব্যবহার নিশ্চিত না করলে কার্যকর সমাধান হবে না।”
দূষণের ভয়াবহ মাত্রা
- WHO মানদণ্ড: PM 2.5 প্রতি ঘনমিটারে ৫ মাইক্রোগ্রাম
- বাংলাদেশ মানদণ্ড: প্রতি ঘনমিটারে ৩৫ মাইক্রোগ্রাম
- সাভারের বর্তমান: WHO মানদণ্ডের ২০ গুণ বেশি
সাভার-ধামরাই অঞ্চলের ২৭২টি অবৈধ ইটভাটা ঢাকাসহ আশপাশের এলাকাকে দূষণের কবলে ফেলেছে। ঢাকার বাতাসে কালো কার্বনের মাত্রা বর্তমানে প্রতি ঘনমিটারে ৬–৮ মাইক্রোগ্রাম, যেখানে উন্নত দেশে তা মাত্র ০.৫–০.৮ মাইক্রোগ্রাম।
পরিবেশ অধিদপ্তরের কর্মকর্তা বলেন,
“ডিগ্রেডেড এয়ারশেড ঘোষণা বায়ুদূষণ নিয়ন্ত্রণে বড় পদক্ষেপ। টেকসই সমাধানের জন্য আধুনিক ভাটা, পরিচ্ছন্ন জ্বালানি ও কঠোর আইন প্রয়োগ জরুরি।”
সরকারের পরিকল্পনা ও সমাধান
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, শুধুমাত্র ইটভাটা বন্ধ করলেই সমস্যা সমাধান হবে না। দীর্ঘমেয়াদে প্রয়োজন:
- পরিচ্ছন্ন জ্বালানি ব্যবহার
- টেকসই শিল্পনীতি
- নিয়মিত মনিটরিং ও নজরদারি
ঢাকা গেজেটের গোয়ন্দা তদন্ত ও আইনী বিভাগের প্রধান মাহমুদুল হাসান মিল্লাত বলেন, ইট ভাটার মালিকেরা আইনের চোখ ফাঁকি দিয়ে এবং কিছু দূর্নীতিবাজ সরকারী কর্মকর্তা-কর্মচারীদের হাত করে এসব কর্মকান্ড চালিয়ে আসছিলো।অনেকে টাকা দিয়ে পরিবেশ অধিদপ্তরের ছাড়পত্রও নিয়েছে। যেহেতু সরকার এবার আইন করে পরিবেশ বাচানোর উদ্দ্যোগ নিয়েছে, গণমাধ্যম হিসেবে আমরাও এর পাশে আছি। কেউ যেন লুকিয়ে বা ঘুষ দিয়ে এমন কাজ চালিয়ে যেতে না পারে সেজন্য আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী, প্রশাসনকে সাহায্য করতে এবং এসকল দুষ্কৃতকারীদের মুখোশ উন্মোচন করতে এটিকে আমাদের Dhaka Gazette Special Investigation (DGSI) তে রাখা হয়েছে। ইতিমধ্যে DGSI এর ফিল্ড অফিসাররা কাজে লেগে পড়েছেন।