কুয়েতে ভেজাল মদে ২৩ জনের মৃত্যু, মূলহোতা বাংলাদেশি গ্রেপ্তার

কুয়েতে ভেজাল মদ পান করে অন্তত ২৩ জন প্রাণ হারিয়েছেন। মিথানল বিষক্রিয়ায় আক্রান্ত হয়েছেন আরও প্রায় ১৬০ জন। এ ঘটনায় দেশটিতে ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে এবং দেশটির নিরাপত্তা বাহিনী দেশজুড়ে অভিযান চালিয়ে অন্তত ৬৭ জনকে গ্রেপ্তার করেছে। তাদের মধ্যে ভেজাল মদ উৎপাদন ও সরবরাহকারী চক্রের মূল হোতা হিসেবে একজন বাংলাদেশিকে শনাক্ত করা হয়েছে। খবর বার্তা সংস্থা রয়টার্সের।

কুয়েতে অ্যালকোহল আমদানি, উৎপাদন ও বিক্রি সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ। দেশটির আইন অনুযায়ী, এসব অপরাধের জন্য রয়েছে দীর্ঘমেয়াদি কারাদণ্ড ও ভারী জরিমানার বিধান। তবুও দীর্ঘদিন ধরে কিছু অপরাধী চক্র গোপনে আবাসিক ও শিল্প এলাকাজুড়ে গড়ে তুলেছিল অবৈধ মদের কারখানা। সম্প্রতি নিরাপত্তা বাহিনী অভিযান চালিয়ে এমন ৬টি কারখানা ধ্বংস করেছে এবং আরও ৪টি স্থাপনা সিলগালা করেছে।

কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, এসব কারখানায় অ্যালকোহলের পরিবর্তে মিশিয়ে দেওয়া হতো মিথানলসহ বিভিন্ন বিষাক্ত রাসায়নিক পদার্থ। কম খরচে দ্রুত মদ প্রস্তুত করার জন্য এ ধরনের রাসায়নিক ব্যবহার করা হলেও তা প্রাণঘাতী প্রমাণিত হয়েছে।

কুয়েতের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় নিশ্চিত করেছে, গ্রেপ্তারদের মধ্যে এক বাংলাদেশি নাগরিক এই চক্রের মূল হোতা হিসেবে চিহ্নিত হয়েছে। তার নেতৃত্বে দেশজুড়ে ভেজাল মদ সরবরাহ ও বিক্রির একটি নেটওয়ার্ক গড়ে উঠেছিল। তদন্তে জানা গেছে, ওই চক্রের সঙ্গে আরও কয়েকটি এশীয় দেশের নাগরিক জড়িত ছিল।

এছাড়া গ্রেপ্তার হওয়া এক নেপালি নাগরিক পুলিশের কাছে স্বীকার করেছে, কীভাবে তারা মিথানল মিশিয়ে এই মদ তৈরি করত এবং কোন পথে তা বিভিন্ন এলাকায় সরবরাহ হতো।

প্রথম দিকে এ ঘটনায় ১৩ জনের মৃত্যুর খবর প্রকাশ পায়। তবে কুয়েতের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২৩-এ। এখনও চিকিৎসাধীন রয়েছেন অন্তত ১৬০ জন। এর মধ্যে কয়েকজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক। মৃতদের বেশিরভাগই এশিয়ার বিভিন্ন দেশের শ্রমিক, যারা জীবিকার জন্য কুয়েতে অবস্থান করছিলেন।

এ ঘটনায় কুয়েতজুড়ে আতঙ্ক সৃষ্টি হয়েছে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে স্থানীয়রা বিষয়টিকে দেশটির জন্য বড় ধরনের নিরাপত্তা হুমকি হিসেবে উল্লেখ করছেন। অনেকেই অবৈধ অভিবাসী ও শ্রমিকদের মাধ্যমে অপরাধচক্র বিস্তারের অভিযোগ তুলেছেন।

কুয়েতের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, অবৈধ মদ উৎপাদন ও বিক্রির সঙ্গে জড়িতদের কোনো ছাড় দেওয়া হবে না। অভিযান আরও জোরদার করা হবে এবং অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে সর্বোচ্চ শাস্তি নিশ্চিত করা হবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *